উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতে যাওয়ার আগে যা জানা প্রয়োজন

উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতে যাওয়ার আগে যা জানা প্রয়োজন

NT-22K 699

ভারতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে পছন্দের তালিকায় বেশ উপরের দিকে রয়েছে। ভারত তার শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্পকলার মতো শিক্ষার প্রতিটি বড় ক্ষেত্র বিশ্বমানের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষাথীরা এখানে শতভাগ বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। এমনকি বৃত্তি ছাড়াও জীবনযাত্রার খরচ এবং পড়াশোনা অনেক পশ্চিমা দেশের তুলনায় ভারতে যথেষ্ট কম।

উচ্চশিক্ষার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা 

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে ভারতে আসছে। এইচএসসি অথবা এ লেভেল উত্তীর্ণ যেকোনো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন। স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা মাস্টার্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। যারা ডিপ্লোমা গ্র্যাজুয়েট তারাও আবেদন করতে পারেন। তাছাড়া যেসব শিক্ষার্থী পিএইচডি করতে চান, তারাও আবেদন করতে পারেন।



শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় 

ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব রাঙ্কিংয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং খুব শিগগিরই তারা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে। ভারতীয় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণের কারণে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে উচ্চমান নিশ্চিত করেছে। ভারতে ৩৪০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৭ হাজার ০০০ গ্র্যাজুয়েশন পর্যায়ের কলেজ রয়েছে,  যা বিশ্বমানের স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।



 কোর্সসমূহ

ভারতের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা শুধু আকারে বিশাল নয়, একাডেমিক কোর্সসমূহের দিক থেকেও বিস্তৃত। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পাশাপাশি, শিক্ষার্থীরা আয়ুর্বেদ, সংস্কৃত এবং হিন্দি বিষয়েও পড়াশোনা করার জন্য আন্তর্জাতিক মানের কোর্স অফার করে থাকে।

 স্কলারশিপ 

ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ প্রদান করে। শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ পাওয়ার পর তারা ভারতে বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারেন। সাধারণত শিক্ষার্থীরা দুই ধরনের স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার সুযোগ পান।  

স্কলারশিপগুলো হলো আইসিসিআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস) স্কলারশিপ এবং ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ। আইসিসিআর স্কলারশিপ বিশেষভাবে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের জন্য এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারে। তারা পিএইচডির জন্যও আবেদন করতে পারেন। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ২০০ জনকে স্কলারশিপ দিচ্ছে আইসিসিআর।



আইসিসিআর পোর্টালে গিয়ে আবেদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ছয়টা নির্ধারিত বিষয় থেকে একটা বিষয় নির্বাচন করে ৫০০ শব্দের মধ্যে একটা প্রবন্ধ লিখতে (কপি করা যাবে না) হবে। তবে আইসিসিআরে আবেদনের ক্ষেত্রে একটা বিষয় খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হচ্ছে পাসপোর্ট; যেটা থাকা বাধ্যতামূলক। এই স্কলারশিপে সাধারণত ২০০ সিট থাকে, যার মাধ্যে ১০০ সিট ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বাকি ১০০ সিট থাকে অন্যান্য। আইসিসিআর কোনো মেডিকেল সায়েন্সে স্কলারশিপ প্রদান করে না। আবেদনের লিংক : http://a2ascholarships.iccr.gov.in/

ইউনিভার্সিটি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক থাকতে হবে। এ জন্য সবচেয়ে ভালো হয় নির্ধারিত ইউনিভার্সিটি লিস্টে আপনার পছন্দের ইউনিভার্সিটি ভালো করে গুগল করে নিতে পারবেন। সেটা হলে খুব সহজেই আপনাদের ভালো ধারণা চলে আসবে ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে। এই স্কলারশিপে আবেদনের জন্য ইয়ার গ্যাপের কোনো বিধিনিষেধ নেই। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স মিনিমাম ১৮ বছর হতে হবে। স্কলারশিপ পাওয়ার পর যে বিষয়গুলো খুব সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে, তা হচ্ছে এম্বাসিতে গিয়ে অফার লেটার নেওয়া, অবশ্যই সঙ্গে পরিবারের কেউ একজন থাকতে হবে। তার পরপরই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। 



পড়াশোনার খরচ

ভারতে শিক্ষার খরচ অন্য দেশের তুলনায় বেশ সস্তা। এ দেশে জীবনযাপন এবং অন্য জিনিসের খরচ কম। যে কেউ সহজেই কম খরচে ভারতে ভালো জীবন যাপন করতে পারে। ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার খরচ বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় তিনগুণ কম। যেসব শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ্যতা অর্জন করে না এবং আর্থিক সমস্যার কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না। তারা ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আবেদন করতে পারে এবং বাংলাদেশের চেয়ে কম খরচে সেখানে পড়াশোনা করতে পারে। তাছাড়া তারা ভারতীয় সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় এর বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারে। যদি তারা বৃত্তি পায় তবে তারা ভারতে বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারে।



ভাষা দক্ষতা

ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএস বা টোফেল স্কোর থাকা বাধ্যতামূলক নয়। তবে আইইএলটিএস স্কোর থাকাটা অবশ্যই ভালো। কারণ সেখানে একাডেমিক প্রোগ্রামগুলো ইংরেজিতেই হয়। এক কথায়, বিশ্বায়নের এই যুগে ইংরেজিতে দক্ষতা না থাকাটা অযোগ্যতার মধ্যেই পড়ে যায়।



ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন 

ঢাকাস্থ ভারতীয় কমিশন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দেশটিতে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে সার্বিক পরামর্শ দিয়ে থাকে। তাই উচ্চশিক্ষার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করতে পারেন : ইন্ডিয়ান হাইকমিশন, ঢাকা : বাড়ি ২, রোড ১৪২, গুলশান-১।

সপ্তাহের রবি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভারতীয় হাইকমিশন খোলা থাকে।

সূত্রঃ dhakatribune

Leave a Comment