IELTS পরীক্ষার আদ্যোপান্ত ও প্রস্তুতি নেওয়ার কৌশল

ক্যারিয়ার উন্নতি

IELTS পরীক্ষার আদ্যোপান্ত ও প্রস্তুতি নেওয়ার কৌশল

SA-23K 523

বিশ্বজুড়ে IELTS সবচেয়ে স্বীকৃত ইংরেজি ভাষা দক্ষতা যাচাইকরণ পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে আপনি বিশ্বের ১৪০টি দেশে পাড়ি জমাতে এক ধাপ এগিয়ে যাবেন এবং ইংরেজি প্রধান যেকোনো দেশে সহজেই কথা বলতে পারবেন।
আইইএলটিএস পরীক্ষা (IELTS Exam) সম্পর্কিত এই ব্লগটি কাদের জন্য?
  • যেসব শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পড়তে যেতে চান।
  • যেসব শিক্ষার্থী IELTS পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ইংরেজিতে নিজেদের রিডিং, রাইটিং, লিসেনিং এবং স্পিকিং-এর দক্ষতাকে আরো ভালো করতে চান।
  • যাঁরা নিজেদের পরিবার নিয়ে বিদেশে ইমিগ্রেশনের জন্য আবেদন করতে চান।
  • যাঁরা বিদেশে চাকরির জন্য যেতে চান।
IELTS পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করার আগে আপনাকে কিছু জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। যেমন, আপনি কোন ধরনের IELTS পরীক্ষা দিতে আগ্রহী। IELTS পরীক্ষার দুইটি প্রধান ধরন হচ্ছে –
১. IELTS Academic Module
২. IELTS General Training Module
IELTS এর এই দুইটি ভার্সনের উদ্দেশ্য ও পরীক্ষার ধরন ভিন্ন। আপনার বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশ্য অনুযায়ী আপনাকে আগে থেকেই জেনে নিতে হবে যে আপনার কোন ধরনের IELTS পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
তবে যে IELTS পরীক্ষাই দিতে চান না কেন, এতে ভালো করার কোনো শর্টকাট বা গোপন কোনো পদ্ধতি নেই যা আপনাকে ২৪ ঘণ্টায় এটার জন্য প্রস্তুত করে তুলবে। আপনাকেই এর জন্য প্রতিদিন একটু একটু করে সঠিক পদ্ধতিতে প্রস্তুতি নিতে হবে।
নিজের দক্ষতা যাচাই করুন
IELTS পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য শুরুতেই যাচাই করে দেখুন আপনি ইংরেজি দক্ষতার কোন স্টেজে আছেন!
ইংরেজি দক্ষতা যাচাইকরণ পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে সঠিক মার্কিং করে আপনি IELTS এর স্কেলে নিজের অবস্থান জেনে নিতে পারবেন। এতে শুধু দক্ষতা যাচাই নয়, আপনি IELTS পরীক্ষার সাধারণ কিছু আইডিয়াও পেয়ে যাবেন।
এখন আপনি আপনার IELTS স্কোরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নিতে পারেন। আপনি যে দেশে যেতে চাচ্ছেন বা যে উদ্দেশ্য যেতে চাচ্ছেন, সেটার উপর ভিত্তি করে আপনার IELTS স্কোরের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করতে হবে।
আপনার যদি ইংরেজির বেসিক বিষয়গুলো নিয়ে দক্ষতা ভালো থাকে, তাহলে প্রায় তিন মাসের মতো প্রিপারেশন আপনার জন্য যথেষ্ট। তবে বেসিক খুব একটা ভালো না থাকলে প্রায় ছয় মাস সময় নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত।
Self-assessment-এর পরে নিজের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করুন। কোথায় আপনি দুর্বল, বা কোন কোন বিষয়গুলো নিয়ে আরও কাজ করা লাগতে পারে, সেগুলো নিয়ে প্ল্যান করে ফেলুন।
আমেরিকান লাইফ-এর একটি জরিপে দেখা গিয়েছে, গ্রাজুয়েশনের পরে ৪২% ছাত্রছাত্রী কোনো বই পড়ে না। এটা আমাদের দেশে আরও বেশি হতে পারে। কিন্তু ইংরেজি শেখার জন্য বই পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে ইংরেজির দক্ষতার বিভিন্ন স্তর, যেমন রিডিং, স্পিকিং এগুলোর বেশ ভালোই উন্নতি হয়ে থাকে।
এছাড়াও IELTS-এর প্রস্তুতি হিসেবে ইংরেজি লেখার প্র্যাকটিস করতে হবে। ভোকাবুলারি প্রস্তুতির জন্য আয়ত্তে আনতে হবে IELTS লেভেলের অনেক শব্দও।
স্পোকেন ইংলিশের জন্য নিয়মিত ইংরেজি কথা বলা চর্চা করতে হবে, জেনে নিতে হবে ইংরেজি শব্দের সঠিক ও নির্ভুল উচ্চারণ। বন্ধুদের সাথে ইংরেজি প্র্যাকটিস করা বেশ কাজে আসে। আয়নার সামনে বাস্তবে কথা বলার প্র্যাকটিস করেও স্পোকেন ইংলিশের দক্ষতা বাড়ানো যায়।
IELTS পরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে শুরু করা যায়, সঠিক পদ্ধতি কী, চলুন আজ এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক-
IELTS পরীক্ষার চারটি সেকশন। এগুলো হচ্ছে –
  1. Listening Section
  2. Reading Section
  3. Writing Section
  4. Speaking Section
IELTS LISTENING SECTION-এ ভালো করার টিপস:
IELTS পরীক্ষার এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেকশন। IELTS এর এই সেকশনে চারটি পার্ট রয়েছে এবং এগুলোতে ৪০টি আইটেম রয়েছে।
এগুলোতে ভালো করার জন্য প্রচুর ইংরেজি monologue বা dialogue শুনতে হবে। তবে শুধু শুনলেই হবে না, অর্থসহ বুঝে নিতে হবে এবং পরবর্তীতে সেটা বলে প্র্যাকটিস করতে হবে। ইংরেজি সংবাদ বা বুলেটিন শুনতে হবে। অর্থ না বুঝলে নোট করে সেটার অর্থ জেনে নিতে হবে। অনেক সময় আমরা accent-এর কারণে সঠিক শব্দটি বুঝে উঠতে পারি না। কিন্তু এভাবে বারবার শুনে প্র্যাকটিস করলে এই সমস্যাগুলো অনেক সহজেই দূর করা যায়।
IELTS READING SECTION-এ ভালো করার টিপস:
এই সেকশনটি পরীক্ষার্থীদের ইংরেজি পড়ার দক্ষতা যাচাই করে। টেক্সট পড়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর করার মাধ্যমে যাচাই করা হয়। এই সেকশনটিতে ভালো করার জন্য ইংরেজির ভোকাবুলারি সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি প্রচুর ইংরেজি আর্টিকেল, নিউজ, এসে, ম্যাগাজিন, জার্নাল, এগুলো পড়তে হবে। আমরা অনেকেই প্রশ্নের দিকে ভালো করে খেয়াল না করেই passage-এর মধ্যে অনেক সময় দিয়ে ফেলি। এতে টেক্সটের অপ্রয়োজনীয় জিনিস বুঝতে বুঝতে অধিক সময় নষ্ট হয় এবং যা প্রকৃতপক্ষে প্রয়োজন, সেটার দিকে খেয়াল করা হয় না।
এখানে ট্রিকটা হচ্ছে, প্রশ্নগুলো আগে পড়ে প্রসেস করে নেওয়া যে আমার কোন কোন ইনফরমেশন প্রয়োজন এবং সেগুলো কীভাবে পাওয়া যাবে। এটা হয়ে গেলে তারপর টেক্সটটি পড়ে দেখা উচিত।
IELTS Writing Section-এ ভালো করার টিপস:
IELTS Academic পরীক্ষার Writing সেকশনে আপনাকে কোনো একটা চার্ট, গ্রাফ বা ডায়াগ্রামের ইনফরমেশন সুন্দর করে ব্যাখ্যা করতে দেওয়া হবে। এছাড়া writing section-এর পরের অংশে কোনো বিষয়ে আপনার মতামত বর্ণনা করতে বলা হবে। IELTS General Training পরীক্ষায় প্রথম পার্টে চার্টের বদলে লেটার দেওয়া হয়।
এই অংশে ভালো করার পদ্ধতি হচ্ছে বেশি করে essay পড়া এবং গ্রামার ও ভোকাবুলারি প্র্যাকটিস করা।
IELTS SPEAKING SECTION-এ ভালো করার টিপস:
IELTS স্পিকিং পার্টটি সম্পূর্ণ করার জন্য আপনাকে দেওয়া হবে ১১ থেকে ১৪ মিনিট। তাই, প্রতিটা মিনিট, সেকেন্ডের গুরুত্ব খুব বেশি। স্পিকিং টেস্টটিতে মূলত যিনি ইন্টারভিউ নেবেন তার সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। আপনাকে যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দেওয়া হবে, সেটা সম্পর্কে ভালো করে গুছিয়ে শুদ্ধভাবে কথা বলতে হবে। এছাড়াও আপনি যা বলেছেন, সেটা সঠিক বলে আপনার কেন মনে হলো সেটাও আপনাকে সুন্দর করে বর্ণনা করতে হবে।
যত বেশি করে ইংরেজিতে কথা বলবেন তত বেশি আপনি IELTS স্পিকিং-এ ভালো করতে পারবেন। তাই আপনাকে আয়নার সামনেই হোক, বা বন্ধুদের সাথেই হোক না কেন, সময় পেলেই কথা বলার প্র্যাকটিস করতে হবে।
গ্রুপ কনভারসেশনে যোগ দিন, ইংলিশ এক্সপার্টদের হেল্প নিন, কোর্স করুন বা ব্যবহার করুন অ্যাপ। সব মিলিয়ে ধাপে ধাপে গুছিয়ে প্রস্তুতি নেয়াই আপনাকে IELTS পরীক্ষায় সাফল্যের দ্বারে পৌঁছে দিতে পারে।

Leave a Comment