পড়ার ফাঁকে চাকরিও করতে পারবেন ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

পড়ার ফাঁকে চাকরিও করতে পারবেন ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

NT 31K 281

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি সংলগ্ন এলাকায় ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (বিডিইউ)’। জ্ঞানের নতুন ধারা সৃষ্টি, নতুন নতুন টেকনোলজি উদ্ভাবন এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপযুক্ত জনবল তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠার দুই বছর পরে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম। বর্তমানে এখানে ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলছেন, পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার দক্ষতা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে নতুন নতুন বিষয় চালু করে পরিচালিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

শুধু তাই নয়, তিনি আরও জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি দুটি বিষয় (সাবজেক্ট) চালু করা হয়েছে, যা বিশ্বের আর কোথাও পড়ানো হয় না। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হচ্ছে, যার ফলে পড়াশোনার মাঝে ছয় মাস বা এক বছরের ছুটি নিয়ে তারা চাকরি করতে পারবেন। বাংলাদেশে এই সুযোগ এটাই প্রথম বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সম্প্রতি বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানিয়েছেন, গতানুগতিক ধারার বাইরে ভিন্ন ধারায় পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়টি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য দক্ষ কর্মী তৈরি এবং পঞ্চম শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্বদানকারী দক্ষ কর্মী তৈরি করার অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার এস এম আববাস।

বাংলা ট্রিবিউন: বিশেষায়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পেছনে উদ্দেশ্য এবং এর পথচলা নিয়ে যদি কিছু বলেন?

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: ২০১৬ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস হয়। পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তৈরি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় এটি। দেশে আরও তিনটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় আছে; মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, অ্যারোনটিক্যাল ইউনিভার্সিটি ও মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি। এসব বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর অন্য দেশেও আছে; ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কিন্তু নতুন কিছু না।

শুধু টেকনোলজির সাবজেক্টগুলো; যেগুলো ভবিষ্যতে কাজে আসবে, সেগুলো নিয়ে এখানে স্টাডি হচ্ছে।  গতানুগতিক কোনও সাবজেক্ট এখানে নেই। বিশ্ব খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। ২০১১ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করলেন, বিশ্ব চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে উপনীত হয়েছে। তৃতীয় শিল্পবিপ্লবে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ছিল– এগুলোও এখন ব্যাকডেটেড। এখন আমাদের নতুন যুগে যেতে হবে, যেখানে মেশিন নিজে কাজ করবে, মানুষের ইনস্ট্রাকশন ছাড়াই সব কাজ করবে। যদি বলতে হয়, সত্যিকার অর্থে টেকনোলজিকে মানুষের কাজে লাগাতে হয়, কাজে লাগানোর জন্য যে ধরনের প্রযুক্তি দরকার সেই প্রযুক্তি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে আসবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ শুরু করি। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, আর ২০১১ সালে সেটাকে আমরা বলছি চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। পঞ্চম শিল্পবিপ্লব নিয়ে বিশ্বে আলোচনা হচ্ছে, এখনও কেউ গ্রহণ করেনি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে এগোচ্ছেন। পঞ্চম শিল্পবিপ্লব এবং স্মার্ট বাংলাদেশ আলটিমেটলি একই জিনিস। কিন্তু আমরা কাউকে কপি করছি না। আমরা আমাদের মতো করে সামনে এগোনোর চেষ্টা করছি। নিত্য-নতুন যত প্রযুক্তি আসছে সেসবের জন্য প্রয়োজন দক্ষ জনবল। সেই জনবল তৈরি করা হলো ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির অন্যতম একটি কাজ। টেকনোলজি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সিস্টেম পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের দেশে কী ধরনের এডুকেশন সিস্টেম হবে, কেমন হওয়া উচিত; সেটি তৈরি করাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ইউনিভার্সিটির প্রতি এতটাই আগ্রহী যে পাঁচ জন সচিবকে এখানে সিন্ডিকেট মেম্বার করে দিয়েছেন। শিক্ষা সচিব, আইসিটি সচিব, অর্থ সচিব, লেজিসলেটিভ সচিব এবং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি সচিব; এই পাঁচ সচিবকে সিন্ডিকেট মেম্বার করে দিয়েছেন, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যেতে পারে।

বাংলা ট্রিবিউন: বর্তমানে কী কী বিষয় পড়ানো হচ্ছে? নতুন কিছু সামনে যুক্ত হবে কিনা।

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: যদিও আমার যোগদান এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি দিনের না। আগের ভিসি অনেক টেকনোলজি ইনকরপোরেট করেছেন। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি সাবজেক্ট খুলেছি, যা পৃথিবীর কোথাও নেই। কিন্তু ডিমান্ড অনেক, প্রচুর চাকরি আছে। একটি হচ্ছে আইসিটি ইন এডুকেশন, আরেকটি হচ্ছে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি)। আমরা সামনে আরও কয়েকটি সাবজেক্ট খুলতে যাচ্ছি। এই বছর তিনটি সাবজেক্ট খোলার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। একটি হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি, ডেটা সায়েন্স এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং যদিও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে, তবু এই সাবজেক্টের অনেক ডিমান্ড আছে।   

বাংলা ট্রিবিউন: পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কতটা ভূমিকা রাখবে বিশ্ববিদ্যালয়টি?

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: আমার যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত সময়টা কম, দুই মাসও হয়নি। কাজেই ৪১ সাল পর্যন্ত ভাবছি না। তবে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে পরিবর্তন। কোনও গতানুগতিক সাবজেক্ট এখানে পড়াই না। গতানুগতিক টেকনোলজি ব্যবহার করি না। ক্লাসে গিয়ে দেখবেন না কোনও শিক্ষক চক-ডাস্টার ব্যবহার করছেন কিংবা হোয়াইট বোর্ড মার্কার দিয়ে লিখছেন। আমরা সেদিকে যাচ্ছি না। কাজেই পরিবর্তনকে সঙ্গে নিয়েই অর্থাৎ চলার পথটাই পরিবর্তনের সঙ্গে। আমি চলছিই নতুন পথে। কাজেই নতুন পথে যখন চলতে হয়, তখন বিভিন্ন এক্সপ্লোর করতে হয়। নতুন কী টেকনোলজি-ম্যাথডোলজি আসছে; এসব যেমন দেখতে হয়, পাশাপাশি চিন্তা করতে হয়, ইনোভেট করতে হয়, ইনোভেশন করতে হয়; কীভাবে আমার চলার পথটাকে বেস্ট পজিশনে নিয়ে যেতে পারি এবং অন্যদের জন্য অনুকরণীয় করতে পারি।

এই ইউনিভার্সিটি প্রত্যেকটা স্টেপ কিন্তু পরিবর্তনকে সামনে নিয়েছে, কোনও কিছুই গতানুগতিক নয়। যদি আমাকে বলতে হয়, ৪১ সাল নয়, একুশ শতকে গিয়েও এই বিশ্ববিদ্যালয় বেস্ট সার্ভিসটাই দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই ইউনিভার্সিটি গতানুগতিক কোনও ইউনিভার্সিটি হবে না। ইউনিভার্সিটি নতুন ও সৃজনশীল ভাবনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে। যে চার বছরের জন্য উপাচার্য হিসেবে আছি, আমি চেষ্টা করবো, পরবর্তী সময়ে উপাচার্য যারা আসবেন তারাও এভাবে এগিয়ে যাবেন।

বাংলা ট্রিবিউন: শিক্ষার্থীর কারিগরি জ্ঞানের প্রয়োগে কতোট গুরুত্ব দেওয়া হবে? ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের বাধা থাকবে কিনা?

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এখানে দুইটা প্রশ্ন আছে, ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় ইন্ডাস্ট্রি নলেজকে অ্যাকোমডেট করার পাশাপাশি ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স বিবেচনা। প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেই—আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সংবিধি তৈরি করতে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা যেন পড়াশোনার মাঝে ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি করতে পারে, এখানে সেই সুযোগ রাখা হচ্ছে। এর ফলে থার্ড ইয়ার বা সেকেন্ড ইয়ার শেষ করার পর, কোনও শিক্ষার্থী চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে ছয় মাস বা এক বছর চাকরি করে ইউনিভার্সিটিতে আবারও পড়তে পারবে। এই অপশন আমরা রাখছি, বাংলাদেশে এই সুযোগ এটাই প্রথম।

ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স বিবেচনার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমি একমত—শিক্ষার কোনও বয়স থাকতে পারে না। যেকোনও বয়সে মানুষ শিখতে পারে। মানুষ সারা জীবনই শিখবে। আমাদের দেশে বয়সের বিষয়টি চলে আসছে কোথা থেকে? ১৯৯০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল মাত্র ছয়টি। আমরা উদার হওয়ার চেষ্টা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আগে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় সংকট ছিল, কাজেই যে ছেলেমেয়েগুলো এইচএসসি পাস করে আসছে, তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের পড়ানোর সুযোগ ছিল না, সত্যিকার অর্থে। এখন যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় বাড়ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে, প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব ডাইমেনশনে এগোবে। আপনি একটি জিনিস খেয়াল করেন, বাংলাদেশে প্রচলিত আইন দিয়ে বা সরকার নির্ধারিত আইন দিয়ে জনগণকে চলতে হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চলে তার নিজস্ব আইনে। সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব আইন করার এখতিয়ার দিয়েছে। কেন দিয়েছে? যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সৃজনশীলতা সঙ্গে নিয়ে আগামী প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে নিতে পারে, পরিবর্তন করতে পারে। কাজেই আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে এবং সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে সব বয়সের লোকদের তাদের যোগ্যতা বিবেচনায় ভর্তি করতে পারবো বলে বিশ্বাস করি। ভবিষ্যতে এই কালচার আসবে।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আমি মনে করি এদিন বেশি দূরে না। আগামী চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যেই দেখবো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বয়সের সীমারেখা উঠিয়ে দিয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন: ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কতটি ব্যাচ অধ্যয়নরত। আর মোট শিক্ষার্থী কতজন?

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: আমাদের আগের রয়েছে চারটি ব্যাচ। গত ১৫ জানুয়ারি একটি ব্যাচের ক্লাস শুরু হয়েছে ১০০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। আমাদের এখন মোট শিক্ষার্থী ৩৭৭ জন। 

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার কথায় বোঝা যায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে হাতে-কলমে শিক্ষায় জোর পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনও ভাড়া করা ভবনে, এই পরিস্থিতিতে ল্যাব সংকট মোকাবিলা কীভাবে সম্ভব?

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: সবাইকে কোনও না কোনও জায়গা থেকে শুরু করতে হয়। আজকে একজন গরিব মানুষ দিন আনে দিন খায়, তাকে যদি ১০ কোটি টাকা দিয়ে দেন তাহলে সে সামলাতে পারবে না। এর জন্য তাকে যোগ্য হয়ে উঠতে হয়। আমরা এখন ভাড়া বাসায় আছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও যে ক্লাসরুম আছে, যেটুকু স্পেস আছে, যে কয়টা ল্যাব আছে, তা আমাদের যাত্রাপথ শুরুর জন্য যথেষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ল্যাব রয়েছে, যা যাত্রা শুরুর জন্য যথেষ্ট। তবে আমাদের যত ক্লাসরুম থাকবে, ল্যাবের সংখ্যা তারচেয়ে কম থাকবে না। এটি হতে হলে আমাদের নিজেদের যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। যে সাবজেক্টগুলো চালু করছি, তার জন্য যোগ্য শিক্ষক তৈরি করাটাও বড় কাজ। টাকা থাকলে রাতারাতি ল্যাব তৈরি করতে পারবো, কিন্তু যোগ্য শিক্ষক তৈরি করতে পারবো না। কাজেই একদিকে আমরা শিক্ষক তৈরি করে যাচ্ছি, অন্যদিকে ল্যাবের সংখ্যাও বাড়াচ্ছি। আমাদের যে নিজস্ব জায়গা নেই বা ভবন নেই, এ কারণে আমাদের শিক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে না। আমাদের অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাব আছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই টেকনোলজির শিক্ষক কোথাও নেই। সংকট শুধু আমাদের নয়, আমরাই পাইওনিয়ার।

বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে, চীন বা আমেরিকা নয়। আমরা নেতৃত্ব দেবো, এই টার্গেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এগোচ্ছেন। হয়তো এটা আমাদের কাছে তত গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না, ২০০৯ সালে যখন বলা হয়েছিল বাংলাদেশ ডিজিটাল হবে, তখন প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হয়নি। এখন কিন্তু ঠিকই সবাই বিশ্বাস করি বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলছেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে, আমরা এখনও হয়তো বিশ্বাস করতে পারছি না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তা যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে এটি অসম্ভব নয়।

প্রধানমন্ত্রীর এই মিশন, ভিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রেখেই এই বিশ্ববিদ্যালয় চলবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মডার্ন সাবজেক্ট। গেম ডেভেলপমেন্ট, বিজনেস ইন্টেলিজেন্স পড়াতে চাই, বিবিএ পড়াতে চাই না। সত্যি কথা বলতে, বিবিএ এখন অচল হয়ে গেছে। কারণ, এখানে টেকনোলজির সংশ্লেষ নেই। সে কারণেই আমরা বিজনেস ইন্টেলিজেন্স সাবজেক্ট খুলতে চাই। ডেটা সায়েন্স, ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, ইনভার্নমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এ ধরনের লেটেস্ট সাবজেক্ট খুলতে যাচ্ছি সামনে। এ সাবজেক্টগুলোর মাধ্যমে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য যে জনবল দরকার তা তৈরি করবো।

দ্বিতীয় হচ্ছে আমাদের শিক্ষা পদ্ধতি। আমাদের দেশের শিক্ষা পদ্ধতি গতানুগতিক সনাতন পদ্ধতি,  চক-ডাস্টারের জায়গায় এখন মার্কার দিয়ে লিখছেন, কিংবা একটি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর লাগিয়েছে। কিন্তু ছাত্রকে যে শিক্ষার ভেতরে ঢোকানো সেটি হচ্ছে না। প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে বের হয়ে আসা সে জিনিসটি হচ্ছে না। যার ফলশ্রুতিতে ১৫ হাজার বা ২০ হাজার টাকা বেতনে লাখ লাখ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি করে যে টাকা পাঠাচ্ছেন, এই টাকা ১০ হাজার বা ১৫ হাজার চাকরিজীবী, যারা হয়তো ভারত বা শ্রীলঙ্কা থেকে এ দেশে আসছেন, তারা সেই পরিমাণ টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। একেকজন আমাদের কাছ থেকে ৫ লাখ, ১০ লাখ, ১৫ লাখ টাকা বেতন নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের শ্রমিকরা বিদেশ থেকে বেতন নিয়ে আসছেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আর বিদেশিরা একেকজন বেতন নিয়ে যাচ্ছেন ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা। আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সেভাবে হয়তো গড়ে তুলতে পারিনি। শিক্ষা ব্যবস্থাকে কর্মমুখী করে গড়ে তুলতে পারিনি। কাজেই আমাদের দরকার কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা। তাহলে পার্থক্য কোথায়?

বাংলা ট্রিবিউন: দেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য আপনাদের পরিকল্পনা কী?

মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে এমন ধরনের গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে চাই, যারা আমাদের দেশের রিকয়ারমেন্ট রিচ করতে পারবে। ইন্ডিয়া, শ্রীলঙ্কা বা দেশের বাইরে থেকে এক্সপার্ট আনতে হবে না। তাতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। এই উদ্দেশ্যে ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে আমরা সম্প্রতি টিউটোরিয়াল বেইজ অ্যাপ্লাইড এডুকেশন ক্লাস শুরু করেছি। থিওরিটিক্যাল ক্লাস হবে, পাশাপাশি অ্যাপ্লায়েড ক্লাস হবে, অ্যানালাইসিস হবে।

একজন ছাত্র এমএ পাস করেছে, তাকে একটি চিঠি লিখতে দেন, একটি নোট লিখতে দেন, তারা পারছে না। তার মানে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটি আছে। সেই ত্রুটি দূর করে একটি সঠিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করছি ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে।

এই ইউনিভার্সিটির সঙ্গে দুটি শব্দ রয়েছে। একটি বঙ্গবন্ধু, আরেকটি ডিজিটাল। ডিজিটাল শব্দটি পরিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আগামী পৃথিবীর স্বপ্ন দেখায়। আর বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা একজন সফল মানুষ। তিনি বাঙালি জাতির জন্য নিজের জীবন ব্যয় করে গেছেন। কাজেই ত্যাগ এবং ভবিষ্যৎ দূরদর্শিতা এ দুটো নিয়েই বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি পরিচালিত হচ্ছে এবং ভালো জায়গায় যাবে।

সূত্রঃ banglatribune

Post Related Things: সরকারি চাকুরি, বেসরকারি চাকুরী, ব্যাংক জব, এন জি ও জব, প্রাইভেট কোম্পানী জব, ডাক্তার জবস, পুলিশ জব, আইনজীবী চাকুরি,সেনাবাহিনী চাকুরী, বিমান বাহিনী চাকুরী, নেভী চাকুরী, এসএসসি পাস চাকুরী, এইচএসসি পাস চাকুরী, ৫ম শ্রেণী পাস চাকুরী, প্রথম আলো চাকুরী, কালের কন্ঠ চাকুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিন চাকুরী, চাকরির খবর, এনটিভি চাকুরি, জাগো জবস, বিডি জবস, আজাদী জবস,

government jobs, govt job, private job, company job, bank jobs, ngo jobs, teacher jobs, education jobs, university jobs, school jobs, chattogram jobs, dhaka jobs, khulna jobs, rajshahi jobs, barishal jobs, rangpur jobs, bdjobs, jagojobsntv jobsprothom alo jobskaler kantho jobsbangladesh pratidin jobsazadi jobs, hsc passed jobs, ssc passed jobs, part time jobs, full time jobs, contractual jobs, foreign jobs, It jobs, army jobsair force jobsnavy jobs, doctor jobs, professor jobs, new job circular 2023, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩

Leave a Comment