বর্তমানে ২০২২ সালে চাকুরীর পেতে প্রয়োজনীয় ১০ টি স্কিল বা দক্ষতা

বর্তমানে ২০২২ সালে চাকুরীর পেতে প্রয়োজনীয় ১০ টি স্কিল বা দক্ষতা

NT-20K 987

বর্তমান সময়ে ভালো একটি  চাকুরি যেন সোনার হরিণ। ফলস্বরুপ দিন দিন বাংলাদেশে বেকারত্বের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আর এই বেকারদের মধ্যে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাটাই বেশি। চাকরির এই অস্থিতিশীল বাজারে আমাদের নিজেদেরকে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে রাখতে কম্পিউটার অপারেটিং, কমিউনিকেশন,লিডারসীপ এর মতো এমন ১০টি স্কিল বা দক্ষতা সম্বন্ধে জানবো আজকের এই আর্টিকেলে।  

চলুন তাহলে চাকরির বাজারের এমন ১০ টি স্কিল বা দক্ষতা সম্পর্কে জেনে নিই যা আপনাকে অন্যদের তুলনায় আরো একধাপ এগিয়ে রাখবেঃ

১.কম্পিউটার অপারেটিংঃ বর্তমান যুগ হলো কম্পিউটারের যুগ। আজকাল এমন কোনো কর্মসংস্থান নেই যেখানে কম্পিউটারের ব্যাবহার নেই। সব কিছুই এখন কম্পিউটার নির্ভর। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে চাকরির ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যাসিক স্কিল থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। মূলত কম্পিউটারের ব্যাসিক স্কিল বলতে আমরা মাইক্রোসফট অফিসের সকল প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের ব্যাবহারকে বুঝি। যেমন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড,  পাওয়ার পয়েন্ট, মাইক্রোসফট এক্সেল ইত্যাদি।  এই সকল সফটওয়্যার ব্যাবহারে নিজেকে যত বেশি পারদর্শী করে তুলতে পারবেন চাকরির ক্ষেত্রে নিজেকে তত বেশি এগিয়ে রাখতে পারবেন। তাই চাকরির জন্য সর্বপ্রথম কম্পিউটার অপারেটিং স্কিল বৃদ্ধি করতে হবে।

চাকুরি পেতে যা জানতে হবে
চাকুরীর বাজারে নিজেকে এগিয়ে রাখার টিপস

২. কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ দক্ষতাঃ  কাজভেদে যোগাযোগের অর্থটা ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে চাকরির ক্ষেত্রে বলা যায় সকল জড়তা দূর করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কিংবা অফিসের কলিগদের মধ্যে সম্পর্ক স্হাপন করার দক্ষতা অর্জনই হলো কমিউনিকেশন স্কিল। এতে কাজের ক্ষেত্রে আপনি অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন আপনার সহকর্মী হতে। তাছাড়া নতুন নতুন চাকরি খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগাযোগ দক্ষতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

৩. নেতৃত্ব বা লিডারশীপঃ চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার মধ্যে নেতৃত্ববোধ বা লিডারশীপ মনোভাব থাকা অত্যন্ত জরুরি। একজন প্রার্থীর লিডারশীপ মনোভাব তার ভাইবা বোর্ডে সহজে প্রকাশ পাই। তাছাড়া চাকরির পদোন্নতির জন্য লিডারশীপ গুরুত্বপূর্ণ একটি মনোভাব বা দক্ষতা যা আপনাকে অন্যান্য প্রার্থী হতে এগিয়ে দিবে। তাই চাকরির পূর্বে বিভিন্ন দলগত কাজের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে লিডারশীপ মনোভাব গড়ে তুলুন।

৪. ক্রিয়েটিভিটি বা সৃজনশীলতাঃ সব কোম্পানিই চাই তাদের প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে যেন সকল কর্মচারী নিজেদের সৃজনশীলতার পরিচয় দেয়। তাই নিজেদেরকে আউট অব দ্যা বক্স চিন্তা করার মনোভাব তৈরি করতে হবে। প্রথাগত নয় এমন সমাধান বের করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। নিজের সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়ে সমস্যা সমাধান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে করে আপনি খুব সহজেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজর কেড়ে নিতে পারবেন।

৫. পাবলিক স্পিকিংঃ অধিকাংশ মানুষ পাবলিক স্পিকিং কে যমদূতের মতো ভয় পায়। মনে রাখবেন একজন ভালো বক্তা খুব সহজে কাজের সমাধান বের করতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। যেকোনো জায়গায় খুব কম সময়েই নিজের অবস্থান দাড় করাতে পারেন। সুতরাং আপনি যদি সকলের সামনে দাড়িয়ে কথা বলার সাহস অর্জন করতে না পারেন তাহলে ক্যারিয়ার গঠনে এবং চাকুরীতে অনেক পিছিয়ে পড়বেন।

৬. ভাষাগত দক্ষতাঃ যেহেতু আমরা জন্মগত বাঙালী তাই বাংলা ভাষা নিয়ে আমাদের তেমন ভোগান্তি নেই। তবে ভালো চাকরির জন্য বাংলার পাশাপাশি আমাদের ইংরেজি ভাষায়ও পারদর্শী হতে হবে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতা আপনাকে চাকরির উচ্চ পর্যায়ে পৌছে দিতে সক্ষম। তাছাড়া আপনি যদি কোনো ইন্টারন্যাশনাল বা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতে চান তাহলে ইংরেজিতে পারদর্শী হওয়া আবশ্যিক। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ভাষায় নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারলে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

৭. প্রেজেন্টেশনঃ চাকরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্কিলগুলোর মধ্যে প্রেজেন্টেশন হলো একটি। এই দক্ষতার দিক দিয়ে আমরা অনেকটা পিছিয়ে। কারো সামনে কিছু তুলে ধরতে গেলে যেন হ-য-ব-র-ল অবস্হা হয়ে দাড়ায়। কিছু বলতে গেলেই হীনমন্যতায় ভোগি। তাই সকলের সামনে দাড়িয়ে সুন্দর ও গোছালো ভাবে কথা বলার দক্ষতা চাকরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।

৮. টিমওয়ার্কঃ আমরা এমন অনেকেই আছি যারা একা একা কাজ করতে পছন্দ করি। কিন্তু একটা কোম্পানি কিংবা প্রতিষ্ঠানে একা কাজ করা সম্ভব না। এখানে প্রয়োজন দলগতভাবে কাজ করা। এর ফলে কাজের গতি বাড়ে এবং পাশাপাশি কাজ নির্ভূল হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। কথায় আছে,  “দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ”।

৯. সমস্যা সমাধান বা প্রব্লেম সলভিংঃ নিজের কর্মক্ষেত্রে ভালো করার জন্য এই বিশেষ গুনটি আপনার মধ্যে অর্জন করা উচিত। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা শিখতে হবে। তাছাড়া এর ফলে আপনার খুব সহজেই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতাও বেড়ে যাবে।

১০. টাইম ম্যানেজমেন্টঃ আমাদের জীবনে যদি সময়ানুবর্তিতা না থাকে তাহলে কোনো কাজই আমরা সঠিকভাবে করতে পারবো না এবং কর্মক্ষেত্রেও ঠিকে থাকা যায় না। সঠিক সময়ে কাজ সম্পাদন করার দক্ষতা যদি আপনার মধ্যে না থাকে তাহলে কোনো প্রতিষ্ঠানই আপনাকে কাজে রাখবে না। তাই ঠিক সময়ের মধ্যে কাজ করার স্কিল গ্রো করা চাকরির জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

সুত্রঃ Agamir Bangla

Leave a Comment