সফল ক্যারিয়ার গড়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস

সফল ক্যারিয়ার গড়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

SA-23K 680

পড়ালেখার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবার একটি উদ্দেশ্য থাকে আর তা হলো ভালো ক্যারিয়ার গড়া।পড়ালেখা শেষ সম্মানজনক কাজ করা, সরকারি চাকরি করা, উচ্চশিক্ষা বা গবেষণা করা আর উদ্যোক্তা হওয়া বা বিজনেস করা যাই হোক না পরিকল্পনা দিনশেষে ভাল ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে সবার মাথাব্যাথা। সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হলে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে হবে এটা নিয়ে এত বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে যাই যে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যাই। যেকোন কাজ শুরু করা মাত্রই সফলতার আশা করি যা আমাদের মাঝে হতাশার জন্ম দেয় এবং আমাদের কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার থেকে অনেক দূরে নিয়ে যায়। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন -” একদিনে বা একবছরে সফলতার আশা করোনা। সবসময় শ্রেষ্ঠ আদর্শকে ধরে রাখো।” তাই সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নিজের সম্ভাবনাকে ধরে রাখতে নিজেকেই তৎপর হতে হবে।

 

১) সবসময় বড় চিন্তা করুন

মানুষ হলো উচ্চাভিলাসী ও স্বপ্নপ্রিয়। আমাদের স্বপ্নগুলো যেমন বড় হয় ঠিক তেমনি ঠুনকোও হয়। একটু নেতিবাচকতার ছোয়াঁ পড়লেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। রবার্ট ব্রুস একটি মাকড়সাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অষ্টমবারের চেষ্টায় সফল হয় তার রাজ্য জয় করতে। তার চিন্তা যেমন বড় ছিল ঠিক তেমনি মজবুতও ছিল। Stephen Richard এর একটি অনুপ্রেরণাময় উক্তি হলো “No matter how small you start, always dream big.” 

 

২) আপনার পছন্দের কাজটি খুঁজে বের করুন

Oprah Winfrey কাজে সফলতার ক্ষেত্রে বলেছেন -“You know you are on the road to success if you would do your job and not be paid for it.” আপনার কর্মক্ষেত্র যাই হোক না কেন কাজটি যদি আপনার পছন্দের হয়, আপনি যদি কাজটি উপভোগ করেন এবং পারিশ্রমিকের থেকে কাজে বেশি মনযোগী হোন তাহলে সে কাজে আপনার সফলতা আসবেই। সবসময় নিজের ভাললাগাকে প্রাধান্য দিন এবং পছন্দসই কাজে সর্বোচ্চ ভাল করার নেপথ্যে কাজ করলে সফলতার পেছনে আপনাকে দৌড়াতে হবে না বরং সাফল্য নিজে ধরে দেবে আপনার কাছে। 

 

৩) আত্মবিশ্বাসী হউন

নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবাই অন্যের সফলতায় নিজে হতাশাগ্রস্থ হয় এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস কমতে থাকে। আপনার জীবনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আপনার নিজের। জন্ম থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিটি মূর্হূর্ত আপনার পাশে আর কেউ থাকুক বা না থাকুক আপনি নিজে আছেন আপনার সাথে।তাই নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা খুব জরুরি।

 

৪) সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করুন

 আমাদের বেশিরভাগ মানুষের ধারণা শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম এবং লক্ষ্যবস্তুর পেছনে দৌড়ানো মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শুধু এভাবে কঠোর পরিশ্রম করতে থাকলে একটা সময় আপনি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়বেন। কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি নিজের চিন্তা শক্তিকে সচল রাখা, সময়মতো খাওয়া, নিজের অনুভূতিগুলোকে প্রকাশ প্রাধান্য দেয়দ তথা মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা ও শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ থাকা সবকিছুই সমানভাবে জরুরী তবেই সফল হওয়া সম্ভব। Koi Fresco বলেন – “Balance is the key to everything. What we do, think, say, eat, and feel, they all require awareness though this awareness we can grow.”

 

৫) ব্যর্থতাকে মেনে নিতে শিখুন

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন -“ভুল করার সকল দরজা যদি বন্ধ করে দাও, তাহলে ঠিক করার দরজাও বন্ধ হয়ে যাবে।” ভুল হবেই, ব্যর্থতা আসবেই তাই বলে জীবন যে থেমে থাকবে তা কিন্তু নয়। জীবন জীবনের গতিতে চলতে থাকবে। তাই প্রতিটি ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী প্রতিটি কাজ পূর্ববর্তী কাজের তুলনায় আরো ভাল করার চেষ্টা থাকতে হবে। এডিসন বলেছিলেন , “আমি ব্যর্থ ছিলাম না, আমি এই লাইটবাল্ব আবিষ্কার করার শত উপায় শিখেছি।”প্রতিটি ‘ ব্যর্থতা ‘ কে একটি শিক্ষা হিসেবে দেখেছেন তিনি । 

 

৬) সর্বদা ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখুন

মানুষ তার নিজের চিন্তা-ভাবনা দ্বারা সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয় সেটা ইতিবাচকই হোক আর নেতিবাচকই হোক। “যারা বলে অসম্ভব, অসম্ভব তাদের দুয়ারেই বেশি হানা দেয়” —জন সার্কল। তাই সব পরিস্থিতিতে ইতিবাচক চিন্তা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বসেরা মিলনিয়ার, বিলিনিয়ার জেফ বেজোস, বিল গেটস , ওয়ারেন বুফে , মার্ক জুকারবার্গ তারা নিজেদের জীবনে যে বাঁধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়নি তা কিন্তু নয়। কিন্তু নেতিবাচক চিন্তাকে তারা কখনোই প্রশ্রয় দেননি। সব পরিস্থিতিতে নিজেকে ইতিবাচক রেখে কাজ করে গেছে বলেই আজ তারা বিশ্বের বুকে সফলতার শীর্ষস্থানে নিজেদের নামকে নথিভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। তাই বিশ্বাস করুন “I can and I will.” 

 

৭) কঠোর পরিশ্রম করতে করুন

আপনি যদি গড়পড়তা মানুষের সামর্থ্যের বাইরে আপনার কাজকে ফুটিয়ে তুলতে মা পারেন তাহলে আর সবার মতো জীবন কেটে যাবে যেকোন রকমে। আপনি হয়তো উদ্ধৃতি শুনেছেন যে সাফল্যের ১% হয় অনুপ্রেরণা,৯৯% পরিশ্রম অথবা আপনি ১০,০০০ ঘন্টা ধারণা সম্পর্কে শুনে থাকতে পারেন। যে কোন উপায়ে আপনি একটি পরিকল্পনা করেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করেন।কাজ থেকে প্রকৃত সাফল্য আসে । Shreesh Pandy বলেন “Hard work never betrays.” আপনি জীবনে আপনার লক্ষ্যের দিকে যদি কাজ করেন যান তহলে অবশ্যই সফল হবেন। 

এলিজা কার্সন বলেন – ‘Always Follow Your Dream and don’t let Anyone Take it from you’. স্বপ্নটা আপনার তাই স্বপ্ন পূরণের দ্বায়িত্বও আপনার। জীবনে চলার পথে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে পরিচিত হবে, কাজকর্ম করবেন। তবে নিজেকে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত করবেন না। দীর্ঘদিনের লালন করা স্বপ্নকে ঠুনকো হাওয়া ভেঙে যেতে দেবেন না। দিন শেষে রাত নামলে কষ্টটা তখনই হয়, দিনটা কেন নষ্ট হতে দিলাম, চাইলে এই দিনের মধ্যে ভালো কিছু করতে পারতাম। কিন্তু রাত নেমে আসায় তখন আর করার কিছুই থাকে না, আবারও অপেক্ষা করতে হয় পরের দিনের। জীবন কিন্তু একটাই একবার বার্ধক্যে উপনীত হলে হাজার চেষ্টাও আর করার কিছুই থাকবে না। তাই সময় থাকতে নিজেকে গুরুত্ব দিন, স্বপ্নগুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে নেন আর ভবিষ্যতকে সাফল্যমন্ডিত করুন।

সূএ : Rmg jobs

Leave a Comment