আইইএলটিএস ছাড়াই বৃত্তি নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে তুরস্কে

আইইএলটিএস ছাড়াই বৃত্তি নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে তুরস্কে

NT-22K 463

বিশ্ব রাজনীতি আর ভৌগোলিক অবস্থানের ভিন্নতার কারণে রাবরই আলোচিত তুরস্কের মূলে রয়েছে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা। তুরস্কের শিক্ষা ব্যবস্থা পুরো ইউরোপের দেশগুলোর মাঝে সেরা দশে আছে। তুরস্কে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিংয়ের প্রথম সারির দিকে। তুরস্কের শিক্ষা ব্যবস্থায় মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরগুলোই বেশ উন্নত।প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে তুরস্কে যাচ্ছেন। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় তুরস্কে বৃত্তির আবেদনের হার বাড়ছে প্রতিবছরই। বর্তমানে তুরস্কের ৫৫টি শহরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন আন্তর্জাতিক শিক্ষর্থীরা। এর মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি করছেন বাংলাদেশের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।

বৃত্তির সুবিধা

তুরস্কে শিক্ষাবৃত্তিতে কী সুযোগ রয়েছে, বৃত্তির জন্য কী যোগ্যতা দরকার হয় এবং শিক্ষাজীবন শেষে সেখানে নাগরিকত্ব বা চাকরির সুযোগ সম্পর্কিত সব তথ্য তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে।

তুরস্কে শিক্ষাবৃত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও টিউশন ফি, এক বছরের ভাষা (তার্কি) কোর্স, আবাসন ও খাবার, স্বাস্থ্যবিমা, মাসিক সম্মানী ভাতা (স্নাতক ৮০০ লিরা, স্নাতকোত্তর এক হাজার ১০০ লিরা ও পিএইচডিতে ১ হাজার ৬০০ লিরা) দেওয়া হয়। এখন ১ লিরা সমান ৬ টাকার বেশি। এই শিক্ষাবৃত্তিতে প্রথমবার যাওয়া ও পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফেরার বিমান টিকিট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর বাইরে পার্টটাইম ও পড়াশোনা শেষে ফুলটাইম চাকরি এবং নাগরিকত্বের সুযোগও রয়েছে।

বৃত্তির যোগ্যতা

তুরস্কের বৃত্তির জন্য আবেদনের পুরো প্রক্রিয়াই হয় বিনামূল্যে। তবে বৃত্তিতে আবেদন করতে হলে স্নাতকের জন্য এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ৭০% এবং স্নাতকোত্তর-পিএইচডির জন্য স্নাতক-স্নাতকোত্তরে ৭৫% নম্বর থাকতে হয়। তবে মেডিকেলে ভর্তি হতে চাইলে ৯০% নম্বর লাগবে।

ভাষা

তুরস্কে পড়াশোনার ভাষা তুর্কি হলেও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজিতে পড়ার সুযোগ দেয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী টোফেল বা জিআরই স্কোর থাকতে হয়। তুরস্কে আইইএলটিএস স্কোর গ্রহণযোগ্য নয়।

বয়সসীমা

স্নাতকের জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ২১ বছরের নিচে।

স্নাতকোত্তরে আবেদনের বয়স ৩০ বছরের নিচে।

পিএইচডি ৩৫ বছরের নিচে।

আর রিসার্চ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ৪৫ বছরের নিচে।

 আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

 সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড একটা পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

 পাসপোর্ট অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মসনদের স্ক্যান কপি। (ইংরেজি কপি হতে হবে)

 এএসসি বা দাখিল এবং এইচএসসি বা আলিমের মূল সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের স্ক্যানকপি। (কোথাও থেকে সত্যায়িত করতে হবে না।)

 সব পরীক্ষার সার্টিফিকেট।

 সব পরীক্ষার মার্কশিট।

জন্মনিবন্ধন (ইংরেজিতে), জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্টের স্ক্যান কপি।

টোফেল ও জিআরই ইত্যাদির সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।

দুটি রেফারেন্স লেটার (বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের হলে ভালো হয়)।

যত ধরনের এক্সট্রা কারিকুলার সার্টিফিকেট আছে (রচনা প্রতিযোগিতা, স্কাউট, বিএনসিসি, জিপিএ–৫ সংবর্ধনা, কোনো এনজিও বা অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ইত্যাদি)।

তুরস্কে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি এবং রিসার্চ প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। এখন স্নাতকের জন্য আবেদন করতে একজন শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ২১ বছরের নিচে। স্নাতকোত্তরে আবেদনের বয়স ৩০ বছরের নিচে। পিএইচডিতে ৩৫ বছরের নিচে। এছাড়া রিসার্চ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ৪৫ বছরের নিচে।

আবেদনের সময়

তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর নতুন সেশনে আবেদন শুরু হয় ১০ জানুয়ারি থেকে। যা চলে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আগ্রহীরা এ সময়ের মধ্য আবেদন সম্পন্ন করবেন।

আবেদনের ঠিকানা

তুরস্কের শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন অনলাইনে করতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াই হয় বিনামূল্যে। আগ্রহীরা আবেদন করতে পারবেন turkiyeburslari.gov.tr ওয়েবসাইট থেকে। প্রতি বছর ১০ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারিরপর্যন্ত শিক্ষাবৃত্তির আবেদন নেওয়া হয়। তবে বৃত্তির আবেদন করার সময় বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবজেক্ট বাছাই করতে হয়। এক্ষেত্রে যাদের রেজাল্ট ভালো এবং ওপরে উল্লেখিত সব যোগ্যতা রয়েছে, তারা তুরস্কের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পছন্দ করতে পারেন। যারা যোগ্যতার দিক থেকে একটু দুর্বল, তারা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করে দিলে বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। নতুন আবেদনকারীরা বিস্তারিত জানতে পারবেন তুরস্কে পড়াশোনা করা বাংলাদেশিদের কাছ থেকে। তুরস্কে অধ্যায়নরত বা অধ্যায়ন শেষে বসবাসরতদের একাধিক ফেসবুক গ্রুপও রয়েছে।

টিউশন ফি

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রোগ্রামের টিউশন ফি ২৪০ থেকে ৭৫০ ডলার। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় টিউশন ফি ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলার। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামের টিউশন ফি যথাক্রমে ৩০০ থেকে ৬০০ ও ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলার।

জীবনযাত্রার ব্যয়

তুরস্কের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ উপযোগী। একজন শিক্ষার্থীর জন্য মাসে থাকা-খাওয়ার খরচ, পোশাক, পরিবহন, টেলিফোন খরচ বাবদ ১০-১৫ হাজার টাকার মধ্যেই হয়ে যায়। 

সূত্রঃ dhakatribune

Leave a Comment